নিঝুম রাত

 


একাকী বসে আছি দিনের আলো ঘনিয়ে এলো সন্ধ্যা নেমে এলো মা-বাবা ভাই বোন কেউ বাসায় নেই। আজ মন একাকী শুধু নিরোবতা একা একা লাগছে।আকাশে দিকে তাকিয়ে দেখি চাঁদ টা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমাকে কি যেনো একটা বলতে চায়।আমিও চাঁদের দিকে তাকিয়ে রইলাম। কিছু খন পরে শুনতে পেলাম দক্ষিণ দিক থেকে একটা বাতাস এলো। এর ভিতরে চাঁদ টা কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো।আসলে চাঁদের উপরে এক টুকরো মেঘ এসে বাসা বেদেছে বাতাস ঠান্ডা লাগছে। আমার মনে হচ্ছিল বৃষ্টি হতে পারে কিছু না কিছু খন পরে মেঘ চলে গেলো বাতাস বন্ধ হয়ে গেলো।আমি একা শুধু একা মনে পরে গেলো ১০ বছর আগে গ্রামের একটি মেয়ের সাথে কাটানো মায়াবী রাতের কথা

আমি তখন গ্রামে থাকি ক্লাস নাইনে পড়ি।পাশের গায়ের একটি মেয়ে ছিলো সুরমা নামে। দেখতে সুন্দরী, লম্বা চুরা ছিলো দেখার মত। 

আমি একদিন বাজার করতে যেতে ছিলাম।বাজার করা শেষ করে বাড়িতে ফেরার পথে দেখি সুরমা তার বাবার জন্য খাবার নিয়ে মাঠে যাচ্ছে। মেয়ে টি ছিলো লম্বা কাপড় পরা।তাকে দেখে চোখ ফিরাতে পারছিলাম না। আল্লাহ সৃষ্টি কি অপরুপ। সে দিনের মত বাড়িতে চলে গেলাম। 

এভাবে কিছু দিন চলে গেলো। আমি ইস্কুল থেকে আসতে ছিলাম সাথে আমার তিন জন বন্ধু ছিলো। হটাৎ দেখি একটি লোক রাস্তা পাশে পেটের ব্যাথা কাতরাচ্ছে। আমরা তারাতাড়ি লোকটি কাছে গেলাম এবং তাকে কাছে একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলাম। আমার সাথে বন্ধু বল্লো তুই এখানে থাক আমরা বাড়িতে যাই। পরে আসবো আনে। আমি লোকটি পাশে বসে ছিলাম। কিছু সময় পরে লোক ব্যাথা কমে গেলো।তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার বাড়িতে কোথায় চলে আপনাকে বাড়িতে পৌঁছাতে দি।

পরে লোকটিকে নিয়ে তার বাড়ি উঠানে যেতে তার মেয়ে ছুটে আসলো আরএ এ তো সেই মেয়ে টি। যাকে মাঠে যেতে দেখেছিলাম। যাই হোক লোকটিকে ঘরে তুলে দিলাম। লোক আমাকে বসতে বল্লো। আমাকে জিজ্ঞেস করলো বাড়ি কোথায়। আমি সব কিছু তাকে বলার পরে। আমি তাকে বল্লাম আমি ব্যাথার রোগটি কত দিন থেকে।

লোকটি মন খারাপ হয়ে গেলো বল্লো আমি না খেয়ে থাকতে পারি না। সকালে আমি না খেয়ে মাঠে যাই। আমার ঘরে খাওয়া মত কিছু দিলো না। তাই আমার পেটে ব্যাথা হয়েছে।

তার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলেম। একটা মেয়ে নিয়ে কত কষ্ট করে না খেয়ে মাঠে কাজ করে। আচ্ছা কাকা আজ তা হলে আমি যাই। 

এই বলে আমি বাড়িতে চলে গেলাম। পরে দিন এই বিষয় টি আমার বন্ধুের সাথে আলাপ করলাম। সকলের পরামর্শ নিয়ে আমরা তাকে সাহায্যে করার কথা ভাবলাম। 

পরে দিন আমার কিছু চাল,ডাল তরকারির কিনে লোকটি বাড়িতে পৌঁছে দিলাম। লোকটি অনেক খুশি হয়েছিলো আর আমাদের জন্য দোয়া করলো।

লোকটি ঘরে মেয়ে টি সৎ মা ছিলো। লোকটি প্রথম ঘরের মেয়ে ছিলো সুরমা।আর সুরমার বয়স ছিলো ১১ বছর কিন্তু বেস লম্বা ছিলো।

আমরা বন্ধু কিছু দিন পর পর তাদের খোজ খবর নিতাম। 

একদিন রাতে খবর পেলাম সুরমাকে তার সৎ মা জোর করে বিয়ে দিতেছে ৩৫ বছরের ছেলের সাথে। ছেলের টাকা পয়সা ছিলো। সুরমার মা ছেলে টাকা কথা শুনে নাবালিকা মেয়ে কে বিয়ে দিবে। 

সুরমা এই বিয়ে তে রাজি ছিলো না। সে কেবল মাত্র সাতম শ্রেণীতে পড়ে। তার আশা ছিলো বড় কিছু করার। 

যা হোক আমার যখন খবর শুনলাম সুরমাকে জোর করে বিয়ে দিতেছে। আমি এবং আমার বন্ধরা তাদের বাড়ি গিয়ে শুনি মেয়ে ঘরে না। সে সময় রাত ১০ টা বাজে মেয়ে পালিয়েছে। তার সৎ মা তার বাবাকে গালি দিতেছে যেখান থেকে পারো মেয়েকে নিয়ে আসো আজকে রাতেই বিয়ে হবে। 

আমরা গিয়ে তাদেরকে বুঝালাম যে এটা বাল্যবিবাহ এই বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিতে হয় না। পরে নানান রকম সমস্যা হবে এমনকি মেয়ে মারা যেতে পারে। অনেক সময় বুঝিয়ে বেরিয়ে পরলাম সুরমাকে খুজতে। 

এতো রাত কোথায় খুজবো। আমরা তিন বন্ধু তিন দিকে গেলাম। রাত ১২ কোথাও নেই সুরমা। আমি অনেক ক্লান্ত হয়ে একটি গাছের নিচে বসে পড়লাম। কিছু খন পরে দেখি গাছের পাশে নিল জামা পরা মেয়ে টি গুমিয়ে আছে। আমি বয় পেয়ে ছিলাম তারপর বয় কেটে গেলো রাতের রচনার আলোতে সুরমার মুখটি জলসাল করছিলো।সত্যি মেয়ে টি অনেক সুন্দর। 

আমি বসে বসে চিন্তা করলাম। একে এখন ঘরে নিয়ে যাওয়া যাবে না।পরে আবার সমস্যা হতে পারে। রাত ২ টা বাজে সুরমা হটাৎ জেগে উটলো দেখা আমি তার পাশে বসা চিৎকার করা অবস্থা আমি বল্লাম বয় পেরো না। আমি তোমার ক্ষতি করব না। পরে মেয়ে তার জীবনের ঘটনা গুলো আমার কাছে শেয়ার করলো। 

তার সৎ মা তাকে অনেক কষ্ট দেয়। সারাদিন কাজ করার পড়ে দেয় না। ইস্কুলে যেতে দেয় না। তার গায়ে হাত তুলে। তার বাবা কিছু ই বলতে পারে না। তার জীবনের কথা গুলো শুনতে শুনতে কখন যে রাত শেষ হয়ে গেলো বুঝতে পারি নায়। শুনতে পেলাম ফজরের আজান দিতেছে। ততক্ষণে তার বাড়িতে আশা বিয়ে ছেলে চলে গেছে। 

সকাল হলো সুরমা কে নিয়ে তার বাড়িতে গেলাম। তার সৎ মাকে নানা কথা বলে পুলিশের বয় সুরমা তাকে যেনো কোনো আগাত না করা হয় এবং ১৮ বছর না হওয়া পযন্ত তাকে যেনো বিয়ে না দেওয়া হয়।সে ঠিক ভাবে ইস্কুলে যাবে কোন বাদা দেওয়া যাবে না।সব কিছু ঠিক করেদিয়ে আমরা বাড়িতে ফিরে আসি।


পরে আর কোনো সময় হয় নায়। আমি SSC দেওয়া পর ঢাকা আসি। পরে আর সুরমা খোজ নেওয়া হয় নায়। জানি না কি ভাবে আছে। 

ওকে দেখার উদ্দেশ্য করে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া দরকার। এই চিন্তা করে আমার জোসনা ভরা রাত কেটে গেল একা একা। 




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url